WHAT’S HOT NOW

ads header

Business

Theme images by kelvinjay. Powered by Blogger.

Canada Reads champion and Jeopardy! superstar Mattea Roach recommends 3 'must-read' memoirs

  "Essentially, one key thing to know about Joan Didion is not only did she live most of her life in California, but she was a fifth-ge...

Contact form

Name

Email *

Message *

Search This Blog

Blog Archive

Mobile Logo Settings

Mobile Logo Settings
image

Recent

4/recentposts
[recent]

Ad Space

Responsive Advertisement

Comments

4/recentcomments

Subscribe Us

Facebook

Popular

Life & style

Games

Sports

বড় জমায়েত করে সাংগঠনিক শক্তি দেখাবে আওয়ামী লীগ

 সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ঢাকায় নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি দেখাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ এবং পরদিন আগারগাঁওয়ে পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠে সুধী সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এ দুটি সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবেন। সমাবেশ দুটিতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় জমায়েত দেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে সারা দেশ থেকে তরুণ ও যুবকদের আনতে এক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ের সুধী সমাবেশে ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকে নেতা–কর্মীরা অংশ নেবেন। মূলত ঢাকা উড়ালসড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) উদ্বোধনের পর এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

 আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করে। কেউ যদি মনে করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে, সেটা ভুল করবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর–দক্ষিণ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকের সামনে

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে, এবারের দুটি সমাবেশে বড় জমায়েত নিশ্চিত করতে সংগঠনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্ধারিত সংখ্যায় লোকসমাগম করতে বলা হয়েছে। কম জনবল নিয়ে এলে সাংগঠনিকভাবে জবাবদিহি করতে হবে। বেশি লোক আনতে পারলে পুরস্কার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সুধী সমাবেশে বড় লোকসমাগম ঘটাতে জেলা নেতা ও দলীয় জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
২২ আগস্ট তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলার নেতাদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক জেলা ও সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর নাম ধরে ধরে পর্যাপ্ত লোক আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশগুলোতে প্রধানমন্ত্রী বিগত দিনে সরকারের অর্জন তুলে ধরবেন। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে জনগণ কী কী সুফল পাবে, তা জানাবেন। এ ছাড়া যথাসময়ে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কেউ তা ঠেকাতে পারবে না—দলের নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী।


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথম আলোকে বলেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমাবেশ হবে। এগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করে। কেউ যদি মনে করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে, সেটা ভুল করবে।


জাতির পিতা ও বঙ্গমাতার প্রতি ছাত্রসমাজের যে আবেগ, তা দেখা যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে। শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ স্বপ্ন এগিয়ে নিতে ওই দিন লাখো ছাত্র-তরুণ সমবেত হবেন। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ছাত্র সমাবেশ।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন


এত দিন বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ছিল আওয়ামী লীগ। চলতি আগস্টে এই পাল্টা কর্মসূচি থেকে কিছুটা সরে এসেছে দলটি। সেপ্টেম্বরে বিএনপির পাল্টা হিসেবে নামমাত্র কর্মসূচি থাকবে। তবে বড় বড় সমাবেশে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সেপ্টেম্বরের শুরুতে দুটি বড় সমাবেশ দিয়ে সবাইকে চমকে দিতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ যে জনপ্রিয়, তা দেশে-বিদেশে দেখানো একটা লক্ষ্য। আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে—রাজপথে বিএনপি কোনো চাপেই ফেলতে পারেনি আওয়ামী লীগকে, তা দেখানো। সেপ্টেম্বর থেকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এভাবে বড় বড় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। 


আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, গত ২৮ জুলাই বিএনপি পল্টনে যে মহাসমাবেশ করে, তাতে বিপুল লোকের জমায়েত হয়। এর পর থেকেই বড় জমায়েতের চাপ অনুভব করে আওয়ামী লীগ। প্রথমে ২ আগস্ট রংপুরে বড় সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকাসহ সারা দেশে অন্তত ১০টি বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে ক্ষমতাসীন দলের।


আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, দুটি সমাবেশের দিনই ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়বে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হবে না। আওয়ামী লীগ যে রাজপথে কতটা শক্তিশালী এবং জনপ্রিয়—এটাই দেখানো হবে।


সুধী সমাবেশে চার হাজার বাস-ট্রাক আসবে


সুধী সমাবেশের আয়োজন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে ঢাকা বিভাগের ১১টি জেলা ও চারটি মহানগর কমিটিকে নির্দিষ্ট সংখ্যায় লোক জমায়েত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে এক লাখ করে লোকের জমায়েত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগকে বলা হয়েছে ৫০ হাজার লোক আনতে। তাদের ৫০০ বাস-ট্রাক ভরে নেতা-কর্মীদের আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে জেলাগুলোকে গড়ে ৩০ হাজার করে লোক জমায়েত করতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ লোকের জমায়েত করার লক্ষ্য আওয়ামী লীগের। 


আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, দুটি সমাবেশের দিনই ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়বে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হবে না। আওয়ামী লীগ যে রাজপথে কতটা শক্তিশালী এবং জনপ্রিয়—এটাই দেখানো হবে।

 

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি সভা করেছেন। তাঁদের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, এর চেয়ে বেশি লোক আনার চেষ্টা চলছে।


ছাত্রলীগের ৭ দফা নির্দেশনা


ছাত্রলীগের সমাবেশটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে। তবে সংগঠনটির নেতারা এটিকে আগামী নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক শক্তি দেখানোর উপলক্ষ হিসেবে নিয়েছে। 


গত জুলাইয়ে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ করার পরই ছাত্র-যুবকদের দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্রলীগ এ জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। 


১৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সারা দেশের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকে সাত দফা নির্দেশনাসহ একটি চিঠি দেওয়া হয়। শুরুতেই বলা হয়, ছাত্র সমাবেশ সফল করতে ছাত্রলীগের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন শাখার নিজ উদ্যোগে নেতা-কর্মী, ছাত্র-তরুণ ও যুবকদের নিয়ে উপস্থিত হতে হবে। সমাবেশে উপস্থিত ইউনিটগুলোর মধ্যে সেরা ইউনিটকে সাংগঠনিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে। একইভাবে কোনো ইউনিট উপযুক্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে সাংগঠনিক জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে। 

গত রোববার আরেকটি চিঠিতে ছাত্রলীগের নেতাদের প্রতিটি গ্রামে, মহল্লায় এবং ইউনিয়নে ছাত্র সমাবেশের খবর ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, নেতাদের হেঁটে, রিকশা-ভ্যানে চড়ে, মুখে মুখে, ঘুরে ঘুরে মাইকে ও ফেসবুক-টুইটারে সমাবেশের প্রচার করতে হবে।


জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর মিলে সারা দেশে ছাত্রলীগের ১২৬টি মূল ইউনিট রয়েছে। এর অধীনে আরও অনেক স্তর রয়েছে।


ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাতির পিতা ও বঙ্গমাতার প্রতি ছাত্রসমাজের যে আবেগ, তা দেখা যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে। শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ স্বপ্ন এগিয়ে নিতে ওই দিন লাখো ছাত্র-তরুণ সমবেত হবেন। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ছাত্র সমাবেশ।











































চীন, ভারত, রাশিয়ার ঋণ–সাহায্য কমেছে, বেড়েছে বিশ্বব্যাংকের

 গত অর্থবছরে এডিবি, চীন, রাশিয়া ও ভারত আগের চেয়ে কম অর্থ দিয়েছে। কমেছে এনজিওর বিদেশি সহায়তাও।


বাংলাদেশের জন্য সাহায্য ও ঋণ কমে গেছে। বড় ঋণদাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর মধ্যে কেবল বিশ্বব্যাংক ও জাপান ছাড়া বাকি প্রায় সবাই ঋণের ছাড় কমিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এবং চীন, রাশিয়া ও ভারত থেকে বাংলাদেশ আগের তুলনায় কম ঋণ পেয়েছে।


বর্তমান ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় এসব বহুজাতিক সংস্থা ও দেশগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া নির্বাচনের বছরে এসব দেশের অর্থছাড় কম হওয়া নিয়েও বেশ আলোচনা হচ্ছে। শুধু বড় দেশ ও বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থা নয়; বিদেশি সাহায্য সংস্থার ঋণের অর্থছাড়ের পরিমাণও কমেছে। এসব অর্থ এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মাধ্যমে আসে।


কয়েক বছর ধরেই বড় বড় দাতা সংস্থা ও দেশগুলোর ঋণের অর্থছাড় বেড়েছিল। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরের আগের বছরের চেয়ে একলাফে ৭৪ কোটি ডলার অর্থছাড় কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড ১ হাজার ১ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা ছাড় হয়। গত অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীরা সব মিলিয়ে ৯২৭ কোটি ডলার দিয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের মাত্র ৮৮০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের চেয়ে ১৩৭ কোটি ডলার কম।


বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে প্রভাব আছে, এমন বড় দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চীন, রাশিয়া, ভারত। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাপান—এসব সংস্থা ও দেশ নমনীয় শর্তের ঋণ দেয়। এসব সংস্থা ও দেশ পশ্চিমা দেশগুলোর আদলে সুশাসনের সঙ্গে অর্থ খরচকে প্রাধান্য দেয়। প্রচ্ছন্নভাবে এসব সংস্থা ও দেশে পশ্চিমা দেশের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে। অন্যদিকে চীন, রাশিয়া, ভারত কঠিন শর্তের সরবরাহকারী ঋণ দেয়। এসব দেশের ঋণ নিলে তাদের ঠিকাদারকে কাজ দিতে হয়।


ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিডের কারণে বড় দেশগুলোর অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে। তাদের প্রবৃদ্ধিও কমেছে।
শামসুল আলম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী


কেন ঋণ ছাড় কমল—এমন প্রশ্ন করা হলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিডের কারণে বড় দেশগুলোর অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে। তাদের প্রবৃদ্ধিও কমেছে। পর্যাপ্ত সম্পদ সৃষ্টি না হলে ওই সব দেশ বাড়তি অর্থ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দিতে পারবে না। এ ছাড়া আফ্রিকার দেশগুলোতে চাহিদা বেড়েছে। দাতা সংস্থা ও দেশগুলো এখন তাদের বরাদ্দের অর্থ আরও বেশি দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।


নির্বাচনের বছর ঋণ কমার প্রসঙ্গে শামসুল আলম বলেন, নির্বাচন বিবেচনা করে ঋণদাতা দেশ ও সংস্থা ঋণ দেয় না। তারা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঋণ দেয়। কোনো দেশে বড় কলহ না হলে কেউ ঋণ কমায় না। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটা দাগে ভালো আছে।


কে কত ছাড় করল


গত অর্থবছরে বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি। যদিও এডিবির ঋণের অর্থছাড় কমেছে। আগের বছরের চেয়ে ১০১ কোটি ডলার কম দিয়েছে এডিবি। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে সংস্থাটি দিয়েছে ১৫৬ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ডলার।

তবে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছাড় ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক ১৯৩ কোটি ডলার ছাড় করেছে, যা আগেরবারের চেয়ে ২৬ কোটি ডলার বেশি। আরেক বহুজাতিক সংস্থা এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) আগেরবারের চেয়ে গত অর্থবছরে ৫ কোটি ডলার কম দিয়েছে। গত অর্থবছরে সংস্থাটি ২৪ কোটি ডলার দিয়েছে। এসব সংস্থার পাইপলাইনে বাংলাদেশের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ পড়ে আছে। ইআরডির প্রাথমিক হিসাবে এই তথ্য পাওয়া গেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করেনি ইআরডি।


অন্যদিকে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে যেসব দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ ঋণ নেয়, তাদের মধ্যে সব বড় দেশই গত অর্থবছরে অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। প্রথমেই দেখা যাক, দীর্ঘদিনের বন্ধুপ্রতিম দেশ জাপান কত অর্থ দিয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে জাপান আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ কোটি ডলার কম দিয়েছে। গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে ২০৪ কোটি ডলার দিয়েছে, যা যেকোনো ঋণদাতা দেশ ও সংস্থার মধ্যে সর্বোচ্চ।


চীন ও রাশিয়াও অর্থছাড়ে আগ্রহ কম দেখিয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে চীন বিভিন্ন প্রকল্পে ১০১ কোটি ডলার দিয়েছে। কিন্তু গত অর্থবছরে এর পরিমাণ কমেছে। গত অর্থবছরে ৮৯ কোটি ডলার ছাড় করেছে। রাশিয়ারও একই অবস্থা। গত অর্থবছরে ৯৯ কোটি ডলার দিয়েছে। এর আগের বছরে পরিমাণ ছিল ১২২ কোটি ডলার। মূলত রূপপর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া।


চীন ও রাশিয়ার মতো ভারতের অর্থছাড়ের দশাও একই রকম। গত অর্থবছরে ভারত সব মিলিয়ে ২৯ কোটি ডলার ছাড় করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশটি ৩২ কোটি ডলার দিয়েছিল। তিনটি লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) মাধ্যমে ৭৩৬ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। গত এক যুগে সব মিলিয়ে ১৪৯ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে।


গত অর্থবছরে বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি। যদিও এডিবির ঋণের অর্থছাড় কমেছে। আগের বছরের চেয়ে ১০১ কোটি ডলার কম দিয়েছে এডিবি।


বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, কোভিডের সময় টিকা কেনা, হাসপাতাল সরঞ্জামাদির জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা দিয়েছিল। তখন বেশি অর্থ এসেছিল। কিন্তু এখন ঋণের প্রবাহ স্বাভাবিক ধারায় ফিরে এসেছে। এ ছাড়া রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধও অর্থছাড় কমার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।


ঋণের অর্থছাড় সম্পর্কে জানতে ইআরডি সচিব শরিফা খানের সঙ্গে মুঠোফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া খুদে বার্তা পাঠিয়েও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


তবে ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বড় ঋণদাতা সংস্থা ও দেশগুলো চাপে আছে। ওই সব দেশ ও সংস্থা কিছুটা ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। তাই তারা ঋণের অর্থছাড়ে গতি কমিয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার বিদেশি সহায়তার প্রয়োজন পড়ে। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাপানের কাছ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার পাওয়া যায়। বাকি চাহিদা মেটাতে চীন, ভারতের মতো দেশের কাছে সরবরাহ ঋণ নিতে হয়।


নির্বাচন বিবেচনা করে ঋণদাতা দেশ ও সংস্থা ঋণ দেয় না। তারা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঋণ দেয়। কোনো দেশে বড় কলহ না হলে কেউ ঋণ কমায় না। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটা দাগে ভালো আছে।
শামসুল আলম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী


এনজিওর বিদেশি সহায়তাও কমেছে


সরকারের পাশাপাশি দেশে কর্মরত দেশি–বিদেশি বেসরকারি সাহায্য সংস্থাও (এনজিও) বিদেশ থেকে অর্থ আনে। এসব অর্থ আসে এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মাধ্যমে। এই সরকারি সংস্থা এসব অর্থের হিসাব রাখে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) এনজিওর বিদেশি সহায়তাও কমেছে। গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৭৪ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা এসেছে; যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২১-২২ অর্থবছরে অর্থসহায়তা এসেছিল ৮২ কোটি ডলার।

এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর পরিচালক তপন কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশি সহায়তা উল্লেখযোগ্য হারে কমেনি। প্রতিবছর সহায়তা কম–বেশি হয়। করোনার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে গত অর্থবছরে সহায়তা কমেছে বলে তিনি মনে করেন।

ভালো খবর হলো, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সুফল পেয়েছে এনজিওগুলো। ডলারের হিসাবে সহায়তা কমলেও টাকার হিসাবে বেড়েছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত অর্থবছরে সোয়া চার শ কোটি টাকা বেশি পেয়েছে এনজিওগুলো।

এনজিএর বিদেশি সহায়তা কমার চারটি কারণ আছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। যেমন প্রথমত, কোভিড ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ ও বহুজাতিক সাহায্য সংস্থা নিজেরাই অর্থসংকটে আছে। এ জন্য বাংলাদেশে বিশেষ করে রোহিঙ্গাসংক্রান্ত প্রকল্পগুলোতে তহবিল ছাড় কমেছে। দ্বিতীয়ত, প্রক্রিয়াগত জটিলতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এ দেশে সুশাসন ও অধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোর তহবিল প্রবাহ কমেছে। তৃতীয়ত, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বের হচ্ছে। তাই এর প্রভাবেও এনজিওগুলো অর্থ কম পাচ্ছে। চতুর্থত, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক শরণার্থী গেছে। বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে ইউরোপের বড় দেশ ও সাহায্য সংস্থাগুলোকে সেখানেই বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এর ফলে অন্য দেশের জন্য তাদের বরাদ্দ কমছে।

 

এখনো নিখোঁজ ১৫৩ জন, অপেক্ষায় স্বজনেরা

 গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস আজ। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসাবে, গত ১৩ বছরে গুমের শিকার ৬২৩ জন।

নিখোঁজ বাবা পারভেজ হোসেনের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়ে আদিবা ইসলাম। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে তাঁদের স্বজনেরা ‘মায়ের ডাক’-এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন

পুরান ঢাকার বংশালের মো. সোহেল যখন নিখোঁজ হন, তখন তাঁর মেয়ে সাফার বয়স ছিল মাত্র ২ মাস। সাফার বয়স এখন ১০ বছর, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। বাচ্চাদের অনেকে বাবার হাত ধরে স্কুলে যায়, বাবাকে নিয়ে গল্প বলে। সাফা বাসায় ফিরে প্রশ্ন করে বাবা কোথায়? বায়না ধরে, বাবার সঙ্গে স্কুলে যাবে। উত্তর দিতে পারেন না সাফার মা নিলুফার ইয়াসমিন।


সোহেল বংশাল থানা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগ থেকে আরও তিনজনসহ নিখোঁজ হন তিনি। নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এঁদের ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। নিলুফার গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো অপেক্ষায় আছি, সোহেল একদিন ফিরে আসবে।’


সরকারের দায়িত্ব গুমের শিকার ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা। কিন্তু সেটা না করে ভূমধ্যসাগরে সলিলসমাধি হয়েছে—দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এমন নানা বক্তব্য দিয়ে আসল ঘটনা পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন।
মো. নূর খান, নির্বাহী পরিচালক, আইন ও সালিশ কেন্দ্র


নিলুফারের মতো অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এখনো নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের স্বজনেরা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের (এএইচআরসি) হিসাবে, এ রকম এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৫৩ ব্যক্তি। যাঁরা গত ১৩ বছরে বিভিন্ন সময়ে গুম হয়েছেন। হংকংভিত্তিক এই সংস্থা বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ৬২৩ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় ফিরে এসেছেন বা পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৩৮৩ জনকে। আর তিনজনের বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।


সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুরু থেকেই গুমের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এমনও বলা হয়েছে যে এসব ব্যক্তি নিজেরাই আত্মগোপন করে আছেন, হারিয়ে গেছেন বা ভূমধ্যসাগরে সলিলসমাধি হয়েছে।


আজ ৩০ আগস্ট ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস’। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন ফর প্রোটেকশন অব অল পার্সনস এগেইনস্ট এনফোর্স ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ সম্মেলনে যে আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয়, তাতে ৩০ আগস্টকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।


বাংলাদেশের গুমের অভিযোগ একেবারে নতুন নয়। অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময় কিছু কিছু অভিযোগ উঠেছিল। তবে ২০১২ সালে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পর বিষয়টি দেশে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। যদিও বিএনপির অভিযোগ, ইলিয়াস আলীর আগে বিএনপির আরেক নেতা চৌধুরী আলমকেও ঢাকা থেকে গুম করা হয়েছে।


গুমের অভিযোগ বাড়তে থাকে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে। বিএনপির অভিযোগ, নির্বাচন সামনে রেখে এবং নির্বাচন–পরবর্তী আন্দোলন ঠেকাতে বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগের তিন বছরও গুমের অভিযোগ বেশি ছিল।


শুধু বিএনপির নেতা-কর্মী নন, সংখ্যায় কম হলেও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা এবং শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিও গুমের শিকার হয়েছেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ঢাকার ভাটারা এলাকা একটি বাসা থেকে রামপুরা থানা ছাত্রলীগের নেতা মোয়াজ্জেম হোসনকে (অপু) সাদাপোশাকে তুলে নেওয়া হয়।


এএইচআরসির তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে ৩ জন, ২০১০ সালে ১৯ জন ও ২০১১ সালে ৩২ জন গুমের শিকার হয়েছিলেন। এরপর ২০১২ সালে ২৭ জন, ২০১৩ সালে ৫৪ জন, ২০১৪ সালে ৩৯ জনের তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে ৬৮ জন, ২০১৬ সালে ৯৭ জন, ২০১৭ সালে ৯০ জন এবং ৯৮ জনকে গুম করা হয়েছিল ২০১৮ সালে।

 

মোয়াজ্জেম একদিন ফিরে আসবেন, এখনো এই আশায় আছে তাঁর পরিবার। তাঁর বড় ভাই চিকিৎসক মঈনুল হাসান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাইয়ের সন্ধানে মাকে নিয়ে সরকারের উচ্চ মহল থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছি। ভাইকে খুঁজে দিতে আবেদন জানিয়েছি। তাঁরা বলেছেন, দেখছি। কিন্তু আজও ভাইয়ের সন্ধান পাইনি। আমরা এখনো অপেক্ষায় আছি।’ তিনি জানান, তাঁর বাবা এরই মধ্যে মারা গেছেন। ছেলের চিন্তায় মা–ও অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গেছেন।


মঈনুল হাসান বলেন, ‘রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে আমার ভাইকে তুলে নেওয়া হয়। ভাইকে ফেরত পেলে আমরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করব না।’


কোন বছরে কত গুম


মানবাধিকার সংগঠন এএইচআরসি গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের গুম হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে ২০০৯ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত গুম হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।


এএইচআরসির তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে ৩ জন, ২০১০ সালে ১৯ জন ও ২০১১ সালে ৩২ জন গুমের শিকার হয়েছিলেন। এরপর ২০১২ সালে ২৭ জন, ২০১৩ সালে ৫৪ জন, ২০১৪ সালে ৩৯ জনের তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে ৬৮ জন, ২০১৬ সালে ৯৭ জন, ২০১৭ সালে ৯০ জন এবং ৯৮ জনকে গুম করা হয়েছিল ২০১৮ সালে।

গুমের অভিযোগগুলো নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব গুমের শিকার ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা। কিন্তু সেটা না করে ভূমধ্যসাগরে সলিলসমাধি হয়েছে—দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এমন নানা বক্তব্য দিয়ে আসল ঘটনা পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন।’


জাতিসংঘের তালিকা নিয়ে কী হলো


জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জনের একটি তালিকা গত বছর বাংলাদেশ সরকারকে দেয়। গত বছরের ১৪ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক তৎকালীন হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত ঢাকা সফরের সময় এ তালিকা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলেন। মিশেল ব্যাশেলেতের সঙ্গে আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওয়ার্কিং গ্রুপ ৭৬ জনের যে তালিকা দিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১০ জনের খোঁজ পাওয়া গেছে। বাকিদের মধ্যে ১০ জনকে খুঁজে পেতে পুলিশ সহযোগিতা করতে চাইলেও তাঁদের স্বজনদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। বাকি ৫৬ জন ‘পলাতক’ বা নিখোঁজ।


তখন মিশেল ব্যাশেলেত ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো সুরাহার স্বার্থে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠন প্রয়োজন।


জাতিসংঘ ওই তালিকা দেওয়ার পর গত বছরের জানুয়ারিতে সেই তালিকা ধরে খোঁজখবর শুরু করে পুলিশ। তখন গুম হওয়া ব্যক্তিদের বাসায় বাসায় গিয়ে স্বজনদের জেরা করা, থানায় ডেকে পাঠানো ও সাদা কাগজে সই নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গুমের শিকার পরিবারকে হয়রানি করতে নয়, ঘটনা তদন্তে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে যান পুলিশের সদস্যরা।


আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে একটি তালিকা দিয়েছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিই, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, স্থানীয় থানার ওসিদের দিয়ে সেটা যাচাই-বাছাই করা। কী ঘটনা ঘটেছে, সেটা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া। তখন পরিবারগুলো থেকে অভিযোগ করা হলো পুলিশ তাঁদের হয়রানি করছে। পরে আমরা সেটা বন্ধ করে দিলাম।’ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাঁদের গুম বলা হচ্ছে, সেসব পরিবারের কাছে চিঠি দিলাম কিছু তথ্য–উপাত্ত চেয়ে। তদন্ত করে দেখার জন্য যে তাঁরা কোথায় আছেন। কিছু কিছু দেখা গেল দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক রয়েছেন। অনেকে মারাও গেছেন।’


আমাদের একটাই চাওয়া, যাঁদের গুম করা হয়েছে, তাঁদের যেন ফেরত দেওয়া হয়। গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
সানজিদা ইসলাম, সমন্বয়কারী, ‘মায়ের ডাক’


জাতিসংঘের তালিকা ধরে গত বছর যে তদন্ত শুরু হয়েছিল, তার অগ্রগতি ও সর্বশেষ পুলিশের তালিকায় কতজন নিখোঁজ রয়েছেন, সেটা জানতে গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্রের দায়িত্ব থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কাছে এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই।


অবশ্য ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র উপকমিশনার ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাতিসংঘের তালিকা ধরে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, তালিকায় যাঁদের গুম বলা হচ্ছে, তাঁদের অনেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন। কেউ ব্যবসা করছেন। আবার কেউ কেউ বিদেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন।


গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ‘মায়ের ডাক’–এর সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম। যাঁদের পরিবারের সদস্যকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এমন পরিবারগুলোকে নিয়ে মায়ের ডাক নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে।


সানজিদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গুম হওয়া মানুষগুলো কোথায় আছেন, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর দেয় না সরকার। তাঁদের নিয়ে ঠাট্টা করে বক্তব্য দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই চাওয়া, যাঁদের গুম করা হয়েছে, তাঁদের যেন ফেরত দেওয়া হয়। গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা হোক।’



Breathing in wildfire smoke linked with neurological health consequences: study

 As wildfires continue to rage throughout large parts of Canada, new research reveals neurological health consequences from breathing in excess wildfire smoke.

The findings, published in the Journal of Neuroinflammation and conducted by researchers at the University of New Mexico Health Sciences, shined light on how prolonged smoke inhalation – two weeks or more – could trigger brain inflammation.

This inflammatory process, which can persist for a month or longer, directly affects the hippocampus, the brain region associated with learning and memory, the study found. Researchers determined that wildfire smoke can alter neurotransmitters and molecules responsible for information retention in the brain.

The research was led by David Scieszka, a postdoctoral student who assessed the effects of rodents exposed to wood smoke every other day for a period of two weeks.

“We were trying to figure out if the stuff we saw in the wild could at least be partially figured out in the lab,” he said in a press release.

Scieszka and fellow researchers analyzed inflammatory responses in rodent brains as tiny particles from the smoke entered the “blood-brain barrier,” a lining of cells that conceal blood vessels in the brain.

“We were able to measure the inflammatory response amplitude and time frames,” Scieszka said. “We expected it to be a lot shorter. Some of it progressed out to 28 days and we didn’t see a complete resolution, and that was very scary to us.”

Scieszka explained that the blood-brain barrier cells had adapted to the smoke exposure by the second week, but that the immune cells in the brain remained “abnormally activated.”

The study’s senior author, Matthew Campen, said these recent findings are alarming given how regularly people are being exposed to wildfire smoke in recent months.

“Neuroinflammation is the seed for all sorts of bad things in the brain, including dementia, Alzheimer’s disease – the buildup of the plaques – but also alterations in neurodevelopment in early life and mood disorders throughout life,” he said in the release.

“If you’re a firefighter, or if you’re just a citizen in a community that has had some of these dramatic smoke exposures, you could be having neurocognitive or mood disorders weeks or months or weeks after the event.”

Campen added that heavy concentrations of wildfire smoke should prompt people to remain indoors.

“Houses have varying penetrance of particulates. If you’ve got an evaporative cooler, you’re just being exposed to the outdoor air, but a lot of houses will be much more protective.”

N-95 masks offer protection to those who must leave their house despite poor air quality, he added.

Despite the fact that the human body is largely capable of adapting to chronic particulate exposure, Campen said periodic exposures could be reason for concern, even more so than baseline levels of pollutants with less fluctuation.

“Part of what makes this so unique and worrisome is the intermittent nature of it,” he said.

“We have rural communities that are otherwise enjoying clean beautiful air, especially in the Rocky Mountain region, and then all of a sudden they have suffocating levels of pollutants and it’s gone a week later. It’s a real hit to a naïve system.”